চরফ্যাসন (ভোলা) প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাসনের শশীভূষণে দুটি বসত ঘরে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রভাষক নুরনবীর স্ত্রী ভূক্তভোগী ফরিদা অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় আলম সর্দারের নেতৃত্বে তার ভাই শাহাবুদ্দিনসহ ১০-১৫ জন আমার আধাপাকা বসত ঘরে হামলা চালিয়ে নগদ ১লাখ ৩৫ হাজার টাকা ও ৫ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে গেছে। লুটপাট শেষে হামলাকারীরা হামার ও লোহার রড এবং শাবল দিয়ে আমার ঘর ভাংচুরসহ বারান্দার সিড়িঁ ভেঙ্গে তছনছ করে দেয়। ভূক্তভোগী ফরিদা অভিযোগ করে আরও বলেন, আলম ও শাহাবুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে আমার কাছ থেকে ২০লাখ টাকা চাদা দাবি করে আসছে। আমার স্বামী নুরনবী ১০লাখ টাকা দিয়ে খায়ের মুন্সি বাড়িতে একটি বসতঘরসহ ১০শতাংশ জমি ক্রয় করে ভোগ দখলে থাকলেও আমাদের ওই বসতবাড়ি থেকে বেদখল করতে বিভিন্নভাবে অত্যাচার জুলুম ও নির্যাতন করছে এরা। একাধীক সালিস বিচার হলেও আলম গং ফয়সালায় আসেনি। তিনি আরও জানান, আলম স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়, তবে সে ও তাঁর ভাই সাহাবুদ্দিন এলাকায় ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে আমাদের ঘরের দরজার সামনে প্রায় প্রতিদিন মলমূত্র ত্যাগসহ বিভিন্নভাবে আমাদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন করছে। জানা যায়,গত শুক্রবার (৪জুন) বিকাল সাড়ে ৩টার সময় ফরিদা তাঁর বাবার বাড়ি যাওয়ায় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ফরিদার ঘরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ফরিদার অভিযোগ ভাংচুরের সময় প্রতিবেশীরা বাঁধা দিলে মরিয়ম (২৬),রুবেল (২৩),সাজেদা (৪০) ও আয়শা বেগম (৮৫) কে মারধর করে আহত করে। ফরিদার প্রতিবেশি মরিয়ম অভিযোগ করে বলেন, আমাদের একটি রেন্ট্রি গাছের শুকনো ডাল ভেঙ্গে পড়লে আমার ভাই রুবেল তা আনতে যায়। শাহাবুদ্দিনের স্ত্রী সুরমা তা নিতে বাঁধা দেয়। এসময় আমার ভাই রুবেলের সঙ্গে সুরমার বাকবিতন্ডা হলে আলম,শাহাবুদ্দিন,জিসান,রাজিব,হনুফা,নুপুর,রুনুসহ অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন একত্রিত হয়ে লোহার রড,ধারালো দেশিও অস্ত্রসহ শাবল ,হামার দিয়ে আমাদের ঘর ভাংচুর করে পুরো ঘরটি ভেঙ্গে তছনছ করে দেয়। এসময় আমরা তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেই। মরিয়ম আরও বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পরে শ্বশুর পরিবারের দেয়া গচ্ছিত ২লাখ টাকা ও ৫ভরি স্বর্ণালঙ্কারস ঘরের আসবাবপত্র আলমের নেতৃত্বে ঘন্টা ব্যাপী তান্ডব চালিয়ে লুটপাট করে নিয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধীক এলাকাবাসী জানান, আলমের নেতৃত্বে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবেশি মরিয়মদেরকে বাড়ি থেকে যেন বের হতে না পাড়ে এজন্য মরিয়মদের বাড়ির দরজা টয়লেট ও হাঁসমুরগির খোপ স্থাপনসহ টিন দিয়ে বেড়া দিয়ে দেয় শাহাবুদ্দিন ও আলম গং। প্রথমে আলমের লোকজন হামলা ও ভাংচুরের কথা স্বীকার করলেও এ হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং ফরিদার ঘর ভাংচুর ও টাকা পয়সা লুটপাটের ঘটনা অস্বীকার করেন আলম। রসুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ভূক্তভোগীদের বাড়িতে সরেজমিন গিয়ে পরিদর্শন করেছি। আলম ও শাহাবুদ্দিন গংদের সঙ্গে প্রতিবেশি মরিয়মদের জমি সংক্রান্ত একটি বিরোধ থাকায় গাছের শুকনো ভাঙ্গা ডাল আনার মতো তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে এঘটনা ঘটেছে। তবে আলম গং শালিশ ফয়সালা অমান্যকারী। আলমকে একাধীকবার বলা সত্যেও স্টাম্পে সাইন দিয়ে সে শালিশ ফয়সালায় বসতে নারাজ। শশীভূষণ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫৪:১৪ ৬৫ বার পঠিত |
