ভোলাবাণী।।চরফ্যাসন প্রতিনিধি॥
ভোলার চরফ্যাসনে ইউনুস মিয়া নামের এক অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্যর দোকান ঘরের ভাড়া পরিশোধ না করে উল্টো ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন বিএনপি কর্মী জহির ও ইউনুছ। ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে ফের দাবীকৃত বাকী চাঁদার টাকা না পেয়ে দোকান ঘর জবর দখল নিতে সেনা সদস্য ও তার পরিবারের ওপর হামলা করেন তারা। এতে তার একটি হাত ভেঙ্গে যায়। দোকান জবর দখল ও হামলার ঘটনার ৮দিন পর বৃহস্পতিবার ভোলা জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে দুই ভাড়াটিয়া জহির ও ইউনুছ ও নাঈমসহ ৯ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের করে বিপাকে পড়েছেন বাদী। ক্ষিপ্ত প্রভাবশালী বিএনপি কর্মীদের অব্যহত হুমকি ধামকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মামলার বাদীসহ তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য ইউনুস মিয়া।
গত ২ মে চরফ্যাসন পৌরসভা ৫ নং ওয়ার্ডে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পিছনে হামলা ও দোকান জবর দখলের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত জহির পৌরসভা ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হানিফের ছেলে এবং ইউনুছ একই এলাকার কবিরের ছেলে।
শুক্রবার অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য ইউনুস মিয়া জানান, তার মালিকানাধীন ৫টি দোকান স্থানীয় জহির ও ইউনুছসহ কয়েক জনের কাছে স্টাম্প চুক্তির মাধ্যমে এক বছরের জন্য ভাড়া দেয়া হয়। তারা ওইসব ঘরে ঔষাধের দোকান পরিচালনা করে আসছিলেন। তবে দোকান ঘরের ভাড়া পরিশোধ করেনি তারা। জহির ও ইউনুছ বিএনপির সক্রীয় কর্মী। সম্প্রতি সময়ে তার প্রয়োজনে দোকান ভাড়াটিয়া জহির , ইউনুছ ও নাঈমকে দোকান ছেড়ে দিতে বলেন। এতেই শুরু হয় বিপত্তি। ভাড়াটিয়া জহির ও ইউনুছ দোকান ছেড়ে দিতে আপত্তি করেন। এর পর তিনি গত ২৭ জানুয়ারী দোকান ছাড়ার জন্য ভাড়াটিয়াদের উকিল নোটিশ করেন। এবং ব্যবসায়ী সমিতির নিয়ম অনুযায়ী গত ৪ এপ্রিল ব্যবসায়ী সমিতিতে ভাড়াটিয়াদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এতেও টনক নড়েনি প্রভাশালী ভাড়টিয়াদের। পরে দোকান ভাড়াটিয়া জহির ও ইউনুছ বিএনপির প্রভাবশালীদের সঙ্গে আতাঁত করে দোকান ছেড়ে দেয়ার শর্তে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদাদাবী করেন। তিনি নিরুপায় হয়ে তাদের হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। এতই ক্ষ্যান্ত হননি জবর দখলকারী ভাড়াটিয়া চক্র। বাকী সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তিনি তাদের দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়। পরে তিনি নৌ-কন্টিজেন্ট কমান্ডার বরাবরে একিট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ও থানা পুলিশকে জানান। এতে কোন সাড়া না পেয়ে গত ২ মে সকালে ভাড়াটিয়াদেরকে দোকান না ছাড়ার কারন জানতে চাইলে ভাড়াটিয়া জহিরের নেতৃত্বে ইউনুছসহ ১০/১২ জনের একটি চক্র তার উপর অর্তকিত হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করেন। এবং পিটিয়ে হাত ভেঙে দেন। পরে খবর পেয়ে তার স্ত্রী ও কন্যা এগিয়ে এলে ওই চক্র তাদের ওপরও হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করেন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করেন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, জবর দখলকারী চাঁদাবাজ চক্রের হামলার শিকার হয়ে তিনি মামলা দায়ের করে বিপাকে পরেছেন। মামলা দায়েরের খবরে বেপরোয়া হয়ে উঠেন ওই চক্র। তাদের অব্যহত হুমকি ধামকিতে নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন তার পরিবারের সদস্যরা। আসামীদের ফের মারধরের হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। দ্রুত সময়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
অভিযুক্ত মো. জহির জানান, আমি ভাড়াটিয়া এটা সঠিক। কিন্ত অপর একটি পক্ষর সাথে ইউনুস মেলেটারী দোকান ঘর নিয়ে বিরোধ চলমান। বিরোধীয় পক্ষ ভাড়া না দেয়ার জন্য বাধা দেয় তাই আমি তাকে ভাড়া দেইনি। পরে তিনি আমার দোকানে তালা দেয়। আমি দোকানের তালা খুলতে গেলে আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যদের ওপর তারা হামলা করেন। আমরাও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। এবং আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
চরফ্যাসন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, দোকান ঘর নিয়ে আদালত থেকে একটি নোটিশ পেয়ে পুলিশ সরজমিন পরিদর্শন করেছেন। তবে হামলার ঘটনায় কারো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ২০:১৯:০৩ ৭৮ বার পঠিত |