এম.শাহরিয়ার ঝিলন।।ভোলাবাণী।।
ভোলায় অসহায় বিধবা নাজমা বেগমকে পাকাঘরের চাবি তুলে দিলো নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশন। শনিবার (১লা মার্চ) দুপুরে ভোলার উকিল পাড়া নতুন খালপাড় সড়কের পাশে নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে গৃহহীন নাজমা বেগমকে ঘরের চাবি হস্তান্তর করছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক আলহাজ্ব মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন এবং তার স্ত্রী হাসিনা।

নাজমা বেগমের স্বামী ২২ বছর আগে মারা যাওয়ার পর থেকেই অন্ধকার নেমে আসে তার জীবনে, পরের বাসায় কাজ করে কোনরকম পেট চালাতেন তিনি। বয়সের ভারে বর্তমানে কাজ করতে সক্ষমতা না থাকায় ভোলার উকিল পাড়া খালপাড় সড়কের পাশে সন্ধ্যার পরে পিঠা বিক্রি করে কোনরকম চালাতেন একপেটের আহার। তবে একপেটের আহার জোটালেও এক চালের ঘরটি বসবাস অনুপযোগী হওয়ায় ঝড়বৃষ্টি আসলে অন্যের বাড়ীতে আশ্রয় নিতে হতো তাকে। গত ৮ ডিসেম্বর দৈনিক আজকের ভোলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে অসহায় এই নারীর জীবনের একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের নজরে আসে। পরে ওই বিধবা নাজমার জীবনের গল্প শুনে তাকে তার পিঠার দোকানের জন্য তাৎক্ষণাত নগদ অর্থ প্রদান করেন এবং তার বসবাস অনুপযোগী এক চালা টিনের ঘরকে অন্যত্র সরিয়ে পাকাঁ ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। প্রায় দু’মাস নির্মাণ কাজ শেষে আজ সেই ঘরের চাবি ওই নারীর কাছে হস্তান্তর করেন। কয়েক দশক যাবত বিভিন্নভাবে ভোলা জেলার বিভিন্ন এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে সমাজ সেবা মূলক অসংখ্য কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন।
ভোলার বিশিষ্ট সমাজসেবক আলোকিত মানুষ নিজাম উদ্দিন ভোলার মানুষের জন্য অকাতরে গোপনে দান করে যাচ্ছেন। তিনি অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বৃদ্ধাশ্রম নির্মান করেছেন। পাশাপাশি পেশাদার গনমাধ্যম কর্মীদের জন্য অত্যাধুনিক ভোলা প্রেসক্লাব ভবন নির্মানে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। এমনকি ভোলার অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য বিনা মূল্যে চিকিৎসার জন্য একটি চক্ষু হাসপাতাল নির্মান করেছেন। সেখানে গত এক দশকে হাজার হাজার মানুষ চক্ষু রোগের চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি উকিল পাড়া নিজাম হাসিনা কমপ্লেক্স এ কিডনি, হার্টসহ অন্যান্য রোগের জন্য ৮ তলা বিশিষ্ট একটি জেনারেল হাসপাতাল ইউনিট নির্মান কাজ করছেন। যার নির্মাণ কাজ খুব দ্রত চলছে এবং অতি শীঘ্রই এ হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হবে।
সমাজ সেবক আলহাজ্ব নিজাম উদ্দিন বলেন, আমি কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করি। আমাকে আল্লাহ তৌফিক দিয়েছেন বিদায় তাকে সহায়তা করতে পেরেছি। এখানে আমার কোন নিজের কর্তৃত্ব নেই।
এসময় বৃদ্ধ নাজমা কান্না জড়িত কণ্ঠে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আকাশে মেঘ দেখলেই আমার খুব চিন্তায় সময় কাটতো। মাথা গোছাবার যায়গা না থাকায় বৃষ্টি আসলেই ঘরের এক পাশ থেকে অন্য পাশে ছুটে বেড়াতাম। এমন পাকা ঘর আমার স্বপ্নে কল্পনাও ছিলো না। আজকে ঘরে প্রবেশ করার পর মনে হচ্ছে যেন স্বপ্নই দেখছি। পরে কান্না জড়িত কণ্ঠে দু’হাত তুলে আলহাজ্ব মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের জন্য দোয়া করেন এই বিধাবা নারী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক বাংলার কন্ঠের সম্পাদক এম হাবিবুর রহমান দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ শওকাত হোসেন, প্রথম আলো জেলা প্রতিনিধি নেয়ামত উল্লাহ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৪৭:২৩ ৭০ বার পঠিত |