হেলাল উদ্দিন লিটন।।ভোলাবাণী।।তজুমদ্দিন প্রতিনিধি॥
ভোলার তজুমদ্দিনে দখল হওয়া সরকারি খাসজমি উদ্ধারে প্রশাসনের দীর্ঘদিন ধরে কোন তৎপরতা নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় অন্যরা নতুন নতুন ভাবে সরকারি জমি দখল করছেন। এলাকাবাসী প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার না পাওয়া দখলকারীরা আরো বেপরোয়া হচ্ছেন। খাসজমি দখল করতে উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস দখলদারদেরকে ঘুষের বিনিময়ে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগীতা করার অভিযোগ রয়েছে।

লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, ক্ষমতার অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে এসএ ১নং খতিয়ানের ১৯৩৫নং দাগের সরকারি খাসজমি দখল করে ২০২১ সালে আলিশান বাড়ি তৈরী করে শম্ভুপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের শ্রমিক লীগ সভাপতি ফরিদ উদ্দিন। ফরিদের দখল করা খাসজমিটি মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে করা হয়েছে। প্রতিদিন ৫০টি পরিবার ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। তার অবৈধ দখলের ফলে পরিবারেগুলি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় এবং বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ওই এলাকায় বসবাসরত সাধরণ মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করেন। ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর মিজানুর রহমান নামে একজন এলাকাবাসী খাসজমি উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করলেও সেই অভিযোগ কি অবস্থায় আছে অভিযোগকারী জানেনা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গেলেও বন্ধ হয়নি ফরিদের আলিশান বাসা করার কাজ। উপরোন্ত পকেটভারী হয়েছে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় একটি সুত্র জানায়, ফরিদ উদ্দিন শ্রমিকলীগের প্রভাবখাটিয়ে গত ১৬ বছর জমি দখলসহ এমন কোন বিতর্কিত কাজ নেই ফরিদউদ্দিন করেনি। সর্বশেষ গত কিছুদিন আগে আরেক ভোক্তভোগী মোঃ রফিজল নামের এক ব্যক্তি তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহি বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে রফিজল গ্রাম পুলিশ মৃত ছায়েদুল হকের ছেলে ভূমিদস্যু ফরিদ উদ্দিন শম্ভুপুর ৭নং ওয়ার্ডের সোবহান চৌকিদার বাড়ির সংলগ্ন খাসজমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করেন জোড়পূর্বক আ’লীগের ক্ষমতা ব্যবহার করে। মানুষের চলাচলের রাস্তা দখল করে ঘর নির্মাণ করায় শিক্ষার্থীদের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীদের আসা-যওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা পরেন ভোগান্তিতে। তাই তিনি ফরিদের অবৈধ দখলসহ সরকারি সকল অবৈধ দখলদারদের করল থেকে সরকারি খাসজমি উদ্ধারের দাবী জানান প্রশাসনের নিকট। সর্বশেষ ৫ আগষ্টের আগেও শম্ভুপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের একটি প্রতিনিধি দল সরকারি খাসজমিটি প্ররিদর্শন করলেও তা উদ্ধারে কোন কার্যকর প্রদক্ষেপ দেখা যায়নি বলে
অভিযুক্ত ওয়ার্ড শ্রমিক লীগ নেতা ফরিদ উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, ২০২১ সালে ঘর করার সময় বিভিন্ন লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভূমি অফিসের লোকজন এসেছে তাদেরকে ম্যানেজ করেই ঘর উত্তোলন করি। তবে ফরিদউদ্দিন সরকারি খাসজমিতে ঘর নির্মাণ বিষয়টি অকপটে স্বীকারও করেন।
এ বিষয়ে তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুভ দেবনাথ বলেন, শম্ভুপরে খাসজমি দখল করে ঘর নির্মাণের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সার্ভেয়ারকে জমি মাপার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঘরের মধ্যে খাসজমি পাওয়া গেলে ৭-১০ দিনের সময় দিয়ে নোটিশ দেয়া হবে। তিনি তারপরও খাসজমি না ছাড়লে ডিসি স্যারে অনুমতি সাপেক্ষে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৪০:৩৭ ৫৯ বার পঠিত |