বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বের উর্ধ্বে: প্রধানমন্ত্রী

প্রথম পাতা » জাতীয় » বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বের উর্ধ্বে: প্রধানমন্ত্রী
বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২



 ভোলাবাণী ডেক্স ঃবাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার সম্পর্ক এখন কৌশলগত অংশীদারিত্বের ঊর্ধ্বে চলে গেছে এবং গত এক দশকে তা আরও জোরদার হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘গত ৫০ বছরে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার পর, উভয় দেশই ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত সেক্টরাল সহযোগিতায় কাজ করছে।’

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বের উর্ধ্বে: প্রধানমন্ত্রীবুধবার (০৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়াদিল্লির হোটেল আইটিসি মৌরিয়াতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এবং যুদ্ধাহত ভারতীয় সৈনিকদের পরিবারের মাঝে ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সামুদ্রিক ও স্থল সীমানা নির্ধারণের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার সমাধান সেই প্রভাবের সাক্ষ্য বহন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সম্পর্কটি বিশ্বব্যাপী ‘প্রতিবেশী কূটনীতির জন্য রোল মডেল’ হিসাবে পরিচিত।’

তিনি বলেন, ২০০টি মুজিব স্কলারশিপ, দশম শ্রেণীতে ১০০টি এবং দ্বাদশ শ্রেনীর স্তরে ১০০টি, যুদ্ধের ভারতীয় প্রবীণ সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাঁদের বংশধরদের জন্য আমাদের এই শুভেচ্ছা উপহার, যারা আমাদের জন্য ১৯৭১ সালে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন,‘আমরা ভারতীয় ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে তাদের অমূল্য জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং রক্ত দিয়েছেন। যারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের স্মরণ করা আমাদের জন্য সর্বদা গর্বের বিষয়। আপনাদের আমার অভিবাদন, হে সাহসী হৃদয় ,আমাদের বীরদের!’।

শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু আমরা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আমাদের মহান পূর্বপুরুষদের উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী, তাই তরুণ প্রজন্মকে সেই ঐতিহাসিক অতীতের সাথে পুনরায় সংযুক্ত করার জন্য আমাদের এই বিনীত প্রচেষ্টা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন যে বৃত্তি প্রাপ্তরা তাদের পূর্বপুরুষদের বীরত্বের স্মৃতি পুণরায় ঘুরে দেখার, বর্তমান পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত এবং দুই দেশের মধ্যে সেতুবন্ধন চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত বন্ধুত্বের পথ অতিক্রম করছে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও সুবর্ণ জয়ন্তীর ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে ২০২১ আমাদের সম্পর্কের একটি যুগান্তকারী বছর ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী।

প্রধানমন্ত্রী কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন যে ভারতের রাষ্ট্রপতি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় আমাদের বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে যোগ দিয়েছিলেন।

এসব উপলক্ষ্য উদযাপনে বেশ কিছু যৌথ কর্মসূচির আয়োজন করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মহাত্মা গান্ধী এবং বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ, বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনী প্রভৃতি। তাছাড়া ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টের অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে যৌথ প্রযোজনার নির্মানাধীন কায়োপিক ‘মুজিব: দ্য মেকিং অব দ্য নেশন’ এর কাজ চলছে এবং শিগগিরই মুক্তি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে ৬ ডিসেম্বরকে ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে উদযাপন করছে, যে দিনটি একটি ঐতিহাসিক দিন যখন ভারত ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন,‘এই যৌথ উদযাপনের মাধ্যমে, বাংলাদেশ ও ভারত বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে পারস্পরিক আস্থা ও সম্মানের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ভালো প্রতিবেশীকে তুলে ধরেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা আমাদের বিদেশি বন্ধুদের সম্মান জানাতে বাংলাদেশ সরকার একটি কর্মসূচি শুরু করেছে।

“আমরা সৌভাগ্যবান যে ২০১১ সালে প্রথম সম্মাননা প্রদানের অনুষ্ঠান করতে পেরেছিলাম যখন বিদেশী বন্ধুদের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘বাংলাদেশ ফ্রিডম অ্যাওয়ার্ড’ ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীকালে ভারতের আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখার্জীসহ ভারতীয় নেতাদের আরও পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছিল,” বলেন তিনি।

যুদ্ধের নায়ক এবং ভারতের নাগরিক সমাজের সদস্যদেরও পর্যায়ক্রমে সম্মানিত করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, মোট ৩৪০ জন বিদেশী নাগরিক এবং সংস্থাকে সম্মানিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২২৬ জনই ভারতের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সারের এপ্রিলে আমি নয়া দিল্লীতে মোদিজির উপস্থিতিতে বীর যোদ্ধাদের বংশধর ও পরিবারের নিকটাত্মীয় সদস্যদের পুরষ্কার প্রদানের জন্য সম্মান পেয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতে তাদের চিকিৎসার জন্য সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যদের বৃত্তি প্রদানের জন্য ভারত সরকারের সদয় পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, ‘এটি অবশ্যই বাংলাদেশের যুদ্ধ বীরদের জন্য তাদের অব্যাহত সমর্থন এবং সদিচ্ছা প্রদর্শন করে যারা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের জন্য লড়াই করেছিলেন।’

চার দিনের সফরে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভারতের নয়াদিল্লি পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে বহনকারী বিমানটি দুপুর সাড়ে ১২টা দিকে দিল্লি বিমানবন্দরে নামেন। এ সময় তাকে স্বাগত জানান ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা জারদোশ।

বাংলাদেশ সময়: ২২:২৬:০৪   ১৪০ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জাতীয়’র আরও খবর


আজ পহেলা বৈশাখ
সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করুন: প্রধানমন্ত্রী
জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে , ভোটের চিন্তা থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এডিবির আরও সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের হারানো গৌরব ফিরিয়ে এনেছে : প্রধানমন্ত্রী
১০ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে স্বাধীনতা পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী
ইলিশা লঞ্চঘাট থেকে ৫ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ
জেলায় মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
১০৪তম জন্মদিনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

আর্কাইভ