ভোলায় বর্ষা মৌসুমে নার্সারি ব্যবসায় লালুর সাফলতা।

প্রথম পাতা » ফটোগ্যালারী » ভোলায় বর্ষা মৌসুমে নার্সারি ব্যবসায় লালুর সাফলতা।
বুধবার, ১১ আগস্ট ২০২১



সাব্বির আলম বাবু।।ভোলাবাণী।।বিশেষ প্রতিনিধিঃ

এই বর্ষায় নার্সারী ব্যবসায় সাফল্য লাভ করেছেন ভোলার তরুন উদ্যেক্তা লালু। এই উপজেলা ভোলা সদর থেকে ৫-৬ কিলোমিটার দূরে। লালমোহনের বাকলাই বাড়ীর সড়কের একপাশে ছাগলা হাফেজী ও নুরানী মাদ্রাসা। অন্যপাশে বিশ্বাসবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সড়কের পশ্চিম পাশে সারি সারি ফলদ গাছের চারা, কলম আর মৌসুমি সবজির চারা। বিভিন্ন প্রজাতির কলমে বারোমাসি আম, আমড়া, জাম্বুরা, আমলকী, লেবুসহ নানা ফল ধরে আছে। স্থানীয়রা জানান এটি হাবিব নার্সারি।

ভোলায় বর্ষা মৌসুমে নার্সারি ব্যবসায় লালুর সাফলতা।

পড়াশোনা বলতে স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন। উপজেলার কালমা ইউনিয়নের কালমা গ্রামে এক সময় বর্গাচাষী ছিলেন লালু। পর্যায়ক্রমে প্রায় তিন একর জমিতে গড়ে তুলেছেন বিশাল এক নার্সারি। নার্সারির আয়ে তার পরিবারে এসেছে আর্থিক সচ্ছলতা। লালুর অনুপ্রেরণায় স্থানীয় যুবকরা নার্সারি করার দিকে ঝুঁকছেন। প্রায় দুই শতাধিক প্রজাতির ফলদ চারায় সমৃদ্ধ তার নার্সারি। দিন দিন তার নার্সারিতে গাছের প্রজাতির সংখ্যা বাড়ছে। থেমে নেই বিভিন্ন জাত সংগ্রহ। নতুন প্রজাতি বা গাছের খবর শুনলেই সেদিকে ছোটেন তিনি।এ ছাড়া তিনি প্রতি মৌসুমে প্রায় বিশ প্রজাতির সবজির চারা উৎপাদন করে বিক্রি করেন। লালু জানান, লালমোহন সহ গোটা ভোলা জেলায় জলপথে স্বরূপকাঠি থেকে গাছের চারা আসত। এখনও আসে। আমার মনে প্রশ্ন জাগলো স্বরূপকাঠিতে চারা উৎপাদন হলে আমাদের এখানে কেন হবে না। এরপর আমি স্বরূপকাঠি যাই। রাতে হোটেলে থাকতাম, আর দিনে ওদের নার্সারিতে চলে যেতাম। ওরা কিভাবে গুটি কলম, শাখা কলম, গ্রাফটিং করে তা মনযোগ দিয়ে দেখতাম। কাজটা আমি ধীরে ধীরে শিখে ফেলি। তারপর স্বরূপকাঠি থেকে কিছু গাছ কিনে ভোলায় চলে আসি। আমার জমি ছিল না। আট শতক জমি বর্গা নিয়ে কলম করার কাজ শুরু করি। তখন মাত্র চারভাগের মধ্যে এক ভাগ কলম হয়েছে। বাকি গুলো হয়নি। আবার স্বরূপকাঠি যাই। ভুল গুলো শুধরাই, ওদের পরামর্শ নেই। আর সমস্যা হয়নি।

এরপর বগুড়াসহ দেশের অনেক এলাকায় শিখতে গিয়েছি। আবার আসার সময় মাতৃগাছ কিনে বাড়ি ফিরেছি। জাত বেড়েছে, প্রজাতি বেড়েছে। নার্সারিতে আমের ৮টি, কমলার ৪টি, বড়ই’র ৫টি, মাল্টার ৪টি, পেয়ারার ৪টি প্রজাতির কলমের চারা আছে। এরকম প্রায় সব ফলের ৪-৫ প্রজাতি। জাত-প্রজাতি বাড়ার কারণে নার্সারির জায়গা বাড়াতে হয়েছে।

গাছের পাশাপাশি আমি উন্নত জাতের পেঁপে, বেগুন, টমেটো, মরিচ, লাউ, শিমসহ নানা প্রজাতির সবজির চারা উৎপাদন করি। গাছের কলম, চারা, সবজি চারা বেশির ভাগই ক্রেতারা নার্সারি থেকে কিনে নিয়ে যায়। তবে উপজেলার বিভিন্ন হাটেও বিক্রি করি। হাবিব আরো জানান, নার্সারির আয় দিয়েই তার সংসার চলে। এর থেকে কিছু সঞ্চয় করেন। এ ছাড়া আশি শতাংশ জমিও কিনেছেন। গড়ে প্রতিদিন তার নার্সারিতে ৫ জন লোক কাজ করে। এ বছর প্রায় ১৬ লাখ টাকার গাছের চারা, কলম ও সবজি চারা বিক্রি করেছেন। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৫ লাখ টাকা আয় হয়েছে।

হাবিবের স্ত্রী মনোয়ারা শুরুর দিকে স্বামীর সঙ্গে নার্সারিতে সমান তালে কাজ করত। তাদের ২ ছেলে ২ মেয়ে। বড় মেয়ে খাদিজা এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দেবে। ছোট মেয়ে জান্নাত সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। বড় ছেলে তানজিল প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছেলে ইব্রাহিমের বয়স ৪ বছর।

হাবিবের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, নিজে এসএসসি পাস করে আর পড়াশোনা করা হয়নি। কিন্তু সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে শিক্ষিত করবেন।

নার্সারির বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শংকর দাস জানান, বিশেষ করে বেকার যুবকদের জন্য লালুর নার্সারি একটি বড় উদাহরন।

বাংলাদেশ সময়: ২২:২০:০৬   ১২৬ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ফটোগ্যালারী’র আরও খবর


ভোলা সদর উপজেলা নির্বাচন ২০২৪আপনাদের পবিত্র ভোট ৫ বছরের জন্য ভাল পাত্রে জমা রাখবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
দেশ ভাঙার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কংগ্রেস: নরেন্দ্র মোদি
ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার খালের উপর ব্রিজ নির্মানের দাবী মনপুরাবাসীর ॥
বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম
প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষেকর্মস্থলে ফিরছে মানুষ, ইলিশা ঘাটে যাত্রীদের চাপ
ঘনিষ্ঠ দৃশ্য করতে গিয়ে বিপাকে বিপাশা
সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করুন: প্রধানমন্ত্রী
ভোলায় ঈদ উপলক্ষে আকতার হোসেনের ২ হাজার দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষকে সহায়তা প্রদান
ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তায়ভোলায় ঈদে যাত্রীদের ভোগান্তি লাগবে পুলিশের ফ্রি বাস সার্ভিস
হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড মনপুরা ॥ তিন শতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত ॥ ঘরের নিচে পড়ে আহত-৩

আর্কাইভ