আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল, প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের স্বরণীয় দিন

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল, প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের স্বরণীয় দিন
বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২১



নিজস্ব প্রতিনিধি।।ভোলাবাণী।।

আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল, প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের স্বরণীয় দিন

আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল। ১৯৯১ সালের এদিনে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত এবং এক কোটি মানুষ তাদের সর্বস্ব হারায়।নিহতের সংখ্যা বিচারে স্মরণকালের ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ৯১-এর এই ঘূর্ণিঝড় একটি। ৯১-এর এই ভয়াল ঘটনা এখনও দুঃস্বপ্নের মতো তাড়িয়ে বেড়ায় উপকূলবাসীকে। ঘটনার এত বছর পরও স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে পারছেন না সেই দুঃসহ দিনটি। গভীর রাতে ঘুম ভেঙে যায় জলোচ্ছ্বাস আর ঘূর্ণিঝড়ের কথা মনে হলে। নিহতদের লাশ, স্বজন হারানোদের আর্তচিৎকার আর বিলাপ বার বার ফিরে আসে তাদের জীবনে।

তাই আজও ২৯ এপ্রিল আসলে স্বজন হারা মানুষের কান্নায় ভারি হয় উপকূলের পরিবেশ। সেদিন জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে অকালে হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের স্মৃতি উপকূলবাসীকে এখনো তাড়ায়। বেদনা অশ্রু ভারাক্রান্ত হন তারা।

ক্ষতিগ্রস্তদের মতে, সেদিন আবহাওয়া বিভাগ উপকূলীয় এলাকায় ৯নং সতর্ক সংকেত জারি করলেও অজ্ঞতার বশে লোকজন নিরাপদ স্থানে না যাওয়ায় মহা দুর্যোগের শিকার হন। রাত ১০টার পর ১০ থেকে ২০ ফুট উচ্চতায় সাগরের পানি মুহূর্তেই লোকালয়ে ঢুকে জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবলীলায় অনেক মা হারায় সন্তান, স্বামী হারায় স্ত্রী, ভাই হারায় বোনকে। অনেক পরিবার আছে যাদের গোটা পরিবারই পানির স্রোতে হারিয়ে গেছে।

২৯ এপ্রিলের সে ভয়াল স্মৃতি মনে করে এখনও কাঁদেন স্বজন হারানো উপকূলবাসী।

প্রশাসনের হিসাব মতে, ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় ১৯ জেলার ১০২ থানা ও ৯টি পৌরসভায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮২ জন নিহত, ১২ হাজার ১২৫ জন নিখোঁজ, ১ লাখ ৩৯ হাজার ৫৪ জন আহত হন। মাছ ধরার ট্রলার, নৌকা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, গাছ-পালা, চিংড়ি ঘের, স্কুল-মাদরাসা, পানের বরজ, লাখ লাখ গবাদি পশু, ব্রিজ কালভার্ট ভেঙ্গে গিয়ে ক্ষতি সাধিত হয় কয়েক হাজার কোটি টাকার। তাই ২৯ বছর পরও অতীতের স্মৃতি মুছতে পারেনি উপকূলবাসী।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ১৫৬১ সালের জলোচ্ছ্বাসেও উপকূলের বিপুল মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া ১৭৬২ সালে, ১৭৯৫ সালের ৩ জুন, ১৮৯৭ সালের ২৪ অক্টোবরে, ১৯০৫ সালের ২৯ এপ্রিলে, ১৯৬৩ সালের ২৭ মে, ১৯৭২ সালের অক্টোবরে, ১৯৯৭ সালের নভেম্বরে, ১৯৬৫ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে কুতুবদিয়া-দ্বীপসহ উপকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সর্বশেষ ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে কুতুবদিয়া খুদিয়ার টেক নামক একটি এলাকা পুরো বিলীন হয়ে গেছে।

১৯৯১ সালের এ দিনে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর উপ-দ্বীপ ধলঘাটা-মাতারবাড়ি, পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়ন, কুতুবদিয়ার প্রায় পুরো উপজেলা এবং সদরের বৃহত্তর গোমাতলী এলাকায়। ওখানে অধিকাংশ বাড়ি থেকে পরিবারের ৫-৬ জন লোক মারা যান। অনেক যৌথ পরিবারে ৪০ জন মারা যায়। তাই এ দিনটিতে এখনও স্বজন হারানোর বেদনায় বিলাপ করেন অনেকে।

বাংলাদেশ সময়: ১১:১৮:১৯   ৬৪ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


শশীভূষণ বাজারে অগ্নিকান্ডে তিন দোকান পুড়ে ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি
ভোলায় তিনদিন ব্যাপী সাংবাদিকদের বেসিক জার্নালিজম ট্রেনিং এর উদ্বোধন
ভোলার কৃষকরা ঝুঁকছেন ক্যাপসিকাম চাষে
স্মার্টফোনে ই-লাইসেন্স দেখিয়েও গাড়ি চালানো যাবে
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় সৌদি সুন্দরী
মনপুরায় রোগীদের সহায়তার ৩ লক্ষ টাকার চেক বিতরন ॥
ভোলা ইসলামী আন্দোলনের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল।
মনপুরায় মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত
ভোলায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদযাপন
ভোলায় রাসূল(সাঃ) কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

আর্কাইভ