দক্ষিন আইচায় নারী ইউপি সদস্যের অত্যাচারে অতিষ্ট গ্রামবাসী

প্রথম পাতা » দক্ষিণ আইচা » দক্ষিন আইচায় নারী ইউপি সদস্যের অত্যাচারে অতিষ্ট গ্রামবাসী
রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১



নিজস্ব প্রতিনিধি॥ভোলাবাণী।।

---

চরফ্যাসন দক্ষিণ আইচা চরমনিকা ইউনিয়নের ৬.৭.৮ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য রাহিমা বেগমের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে গ্রামবাসী। হামালা মামলা ও আবসান প্রকল্পের আশ্রিতদের ঘর দখলসহ চাঁদাবাজী শিকার হয়ে অহসায় হয়ে পরেছেন ওই ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের প্রায় ৩শ’ পরিবার। সমাজ পতিদের দ্বারে দ্বারে বিচার চেয়ে অসহায় পরিবার গুলো ঘুরে বেড়ালেও ওই নারী ইউপি সদস্য প্রভাবশালী হওয়ায় ব্যবস্থা নেয়নি কেউ। সম্প্রতি সময়ে  আবসান প্রকল্পের বসবাসকারী আশ্রিত পরিবারের সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বারাবরে লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন ওই এলাকার আবাসনে বসবাসকারী ভূক্তভোগি পরিবারের সদস্যরা।
এলাকা সুত্রে জানাযায়, চরমনিকার ইউনিয়নের  ৬.৭.৮ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য রাহিমা বেগমের জিম্মিদশায় পরে আছে অসহায় প্রায় ৩শ’ পরিবার। আবাসনের ঘর দখল করে চাঁদা আদায়, আশ্রিতদের ঘর জবর দখল করে ঘর থেকে বের করে দিয়ে অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয়া,ওই এলাকার ছেলে মেয়ে বিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রেও চাাঁদাদাবীসহ নানান অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ করে মামলা ও হামলা শিকার হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ওই এলাকার ১শ’ অসহায় জেলে পরিবার। তার মামলা ও হামলার  ভয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেনা ওই গ্রামের সমাজপতিরাও।
স্থানীয়রা আরো অভিযোগ ওই ইউপি সদস্যেও ছেলে মামুন একজন মাদকাশক্ত। তার বিরুদ্ধে থানায় মাদক মামলা রয়েছে। মাদকাশক্ত মামুন মাদক সেবন করে ওই এলাকার মেয়ে এবং নারীদের উত্ত্যাক্ত করেন।
স্থানীয় বাসিন্ধা জড়িনা বেগম অভিযোগ করেন,ওই নারী ইউপি সদস্য রহিমা বেগম জোরপূর্বক তার ছেলেকে তুলে নিয়ে মেয়ের বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকে ছেলের সাথের তার স্ত্রীর বিবাধ শুরু হয়। এনিয়ে ওই ইউপি সদস্য তার বাড়ি ঘরে একাধিকবার হামলা ও তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করেন। ওই ইউপি সদস্যের ভয়ে আইনি আশ্রয় নিতে পরেনি তার পরিবার। গত বুধবার তার আত্বীয়ের বিয়েকে কেন্দ্র করে তার বাড়িতে মেহমান আসে। ওই বিয়েতে বাধাগ্রস্ত করতে ওই ইউপি সদস্য রাহিমাসহ তার ছেলে মামুন ও রাশেদ মেহমানদেরকে গালমন্দ শুরু করেন। প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের হামলার শিকার হয়েছি আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা।
দৌলতপুর গ্রামের আবাসনে বসবাসরত ছালাউদ্দিন অভিযোগ করেন, নদী ভাঙনে ভিটে বাড়ি হারিয়ে আশ্রয় নেন প্রতিবেশীর বাড়িতে। প্রায় ১০ বছর আগে দৌলতপুর গ্রামের আবাসন প্রকল্পে তার নামে একটি ঘর বরাদ্দ হয়। ওই ঘরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে তিনি বসবাস করে আসিছেন। ওই নারী ইউপি সদস্য রাহিমা আবাসনের সভাপতি হওয়ার সুযোগে তার কাছে ৫ হাজার টাকা চাঁদাদাবী করেন। তাকে ওই চাঁদা না দেয়ায় তিনি বিভিন্ন সময় তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি সময়ে তিনি স্ত্রী সন্তানসহ আত্বীয়র বাড়িতে বেড়াতে যান। দুদিন পর ফিরে এসে দেখেন তার আবাসন প্রকল্পের ঘরের তালা ভেঙে ওই নারী ইউপি সদস্যের মেয়ে আসমা ও মেয়ের জামাতাকে ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে তাদের ঘর দখল করে নিয়েছেন। জানতে চাইলে তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেন।এঘটনায় তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে তাকে জানান।
ওই গ্রামের আবসানের বাসিন্ধা নিবর ও শরিফ জানান, ওই নারী ইউপি সদস্য একজন সুদকারবারী। তারা দুই ভাই পেশায় জেলে । গত ইলিশ মৌসুমে লোকশানে পরে ওই নারী ইউপি সদস্যে রাহিমার  কাছ থেকে দুই ভাই ব্যবসার পরিধিবৃদ্দির লক্ষে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা সুদে নেয়। ওই নারী ইউপি সদস্য টাকা নেয়ার সময় তাদের কাছ থেকে কৌশলে একটি ফাঁকা স্টম্পে স্বাক্ষর করে নেন।   চলতি ইলিশ মৌসুমে সুদসহ ১লাখ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ কররেও  ওই নারী ইউপি সদস্যা তাদের কাছ থেকে ফাঁকা স্টাম্প নেয়া স্টাম্পে ৫লাখ টাকা লিখে নিয়ে আরো বাকী  বাড়তি টাকা তাদের কাছে থেকে দাবী করেন। তারা ওই বাড়তি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নিবরবের বসত বাড়ি ও শরিফের আবাসনের ঘর দখল করে নেন। ওই ঘরে থাকা তাদের বিহিন্দি জালসহ ঘরের আসবাব পত্র লুট করে নিয়ে যায় । যার মুল্য প্রায় ২  লাখ ৮০ হাজার টাকা। এঘটনায় নিরব ও শরিফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিলে তাদের ঘর ফিরিয়ে দিলেও লুটে নেয়া ঘরে থাকা জাল ও ঘরের আসবাবস পত্র ফিরিয়ে দেয়নি ইউপি সদস্য। ওই জাল এবং ঘরের আসবাব পত্র ফিরিয়ে দিতে বললে ওই নারী ইউপি সদস্য তাদের মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেন।ইউপি সদস্যের মামলা ও হামলার ভয়ে আতংকে আছে তাদের পরিবার। শরিফ , নিবর জরিনা নিলুফার মতো ওই গ্রামের প্রায় ৩শ’ পরিবার নারী ইউপি সদস্যে অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে দিনযাপন করছেন।
নারী ইউপি সদস্য রাহিমা বেগম তার বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি ষঢ়যন্ত্রেও শিকার। তাকে ঘায়েল করতে একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়াচ্ছে।
দক্ষিন আইচা থানার ওসি মো. হারুন অর রশিদ জানান, অনেকের মুখে ওই নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনেছি। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন জানান, ওই নারী ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আবাসনে আশ্রিতদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি সকহকারী কমিশনার(ভুমি) কে তদন্তের জন্য দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৪৫:০৪   ৭৬ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

দক্ষিণ আইচা’র আরও খবর


দক্ষিণ আইচায় ২৫ বছর করে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি গ্রেফতার
দক্ষিণ আইচায় স্কুল ছাত্র নয়নের রিমোট কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত লঞ্চ ভাসছে পানিতে
দক্ষিণ আইচায় জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালিত
ভোলায় ২৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার করেছ
দক্ষিণ আইচায় প্রতিপক্ষের হামলায় দুই নারী আহত
দুই চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে স্মরণ সভা ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত
চর আইচা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসব উদযাপন
১২ বছর পালিয়ে থেকে ও শেষ রক্ষা পেলেন না নুর মোহাম্মদ
দক্ষিণ আইচায় নৌকার প্রার্থী এমপি জ্যাকব এর উঠান বৈঠক
দক্ষিণ আইচায় এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ, মুচলেকায় মুক্তি

আর্কাইভ